স্টাফ রিপোর্টার, দিগন্তবার্তাঃ-
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বান্দিয়া গ্রামের কৃতি সন্তান ডাক্তার আরাফাত পাঠান নাঈম (২৫) সিরাজগঞ্জ ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী সরকারী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সদ্য এমবিবিএস পাস করে ওখানেই ইন্টার্ণ করছিলেন। ২ অক্টোবর শুক্রবার ভোরে মোটরসাইকেল ড্রাইভ করে তিনি ভালুকা সরকারী হাসপাতাল সংলগ্ন নিজ বাসা থেকে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। ওখানে পৌঁছার বেশ কয়েক কিলোমিটার অদূরে একটি ঘাতক ট্রাক তার মোটরসাইকেলটিকে পিছন থেকে থাক্কা দিলে তিনি রাস্তায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
পরিবার ও স্থাণীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মেদুয়ারী ইউনিয়নের বান্দিয়া গ্রামের পূর্বপাড়ার হাশেম পাঠান ওরফে হারেছ পাঠানের ছোট ছেলে ছিলেন নাঈম পাঠান। দুই ছেলের মাঝে বড় ছেলে রিয়াদুল ইসলাম পাঠান ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে বেশ কয়েক বছর ধরে শেল্টেক নামক একটি বেসরকারী সংস্থায় চাকরী করছেন। ছোট ছেলে নাঈম স্কুল জীবন থেকেই ছিলেন খুবই মেধাবী। ভালুকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় সকল শ্রেণীতেই তিনি ছিলেন ফাস্টবয়। ভার্গ্যরে নির্মাম পরিহাস সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় নাঈমকে দূর্বত্তরা অপহরণ নিয়ে যায়। পরে তাকে মুক্তিপণ দিয়ে সিরাজগঞ্জ থেকেই উদ্ধার করা হয়েছিলো। এইচএসসি পাস করে তিনি যখন এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা দেন, তখন তার চান্স হয় সিরাজগঞ্জ ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী সরকারী মেডিক্যাল কলেজে।
ডাক্তারী পড়াশোনাও শেষ করলেন ভালো রেজাল্ট নিয়ে এবং ইন্টার্ণ করছিলেন ওই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু ওই সিরাগঞ্জেই তার প্রাণ কেরে নিলো ঘাতক ট্রাক। শুক্রবার বাদ জুম্মা ডাক্তার নাঈমের প্রথম নামাজে জানাজা পড়ানো হয় সিরাজগঞ্জ ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী সরকারী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরে নিহত নাঈমের লাশ ভালুকায় আনা হলে এলাকায় এক হৃদয় বিধারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। লাশটি এক নজর দেখার জন্য শত শত নারী-পুরুষ বাড়িতে ভীড় জমায়। আশপাশের বাতাস যেনো ভাড়ি হয়ে উঠে। নিহত নাঈমের বাবা মা বাগরুদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকেন। তাদেরকে শান্তনা দেয়া সাহস কেউ পায়নি। পরে বাড়ির পাশে ভান্ডাব আজিম উদ্দিন কিন্ডার গার্টেন মাঠে দ্বিতীয় জানাজা পড়ানো হয় এবং রাতে গ্রামের বাড়ি বান্দিয়ায় তৃতীয় জানাজা শেষে রাতেই মরহুমের লাশ তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।