জহিরুল কাদের কবীর, স্টাফ রিপোর্টারঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুর রশিদ এর ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ২৩ আগস্ট।।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের শৈশব কালের স্মৃতি বিজড়িত ত্রিশাল পৌরসভার সাবেক মেয়র, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও উদ্যোমশীল সমাজকর্মী, মরহুম আব্দুর রশিদ ত্রিশাল সদরে ১৯৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম আব্দুস ছামাদ স্থানীয়ভাবে এক প্রতিপত্তিশীল ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন এবং বিভিন্ন শিক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকান্ডের বিভিন্ন পরিসরে ভূমিকা পালন ও অবদান রাখেন।
শিক্ষা জীবনে আব্দুর রশিদ চেয়ারম্যান ১৯৫৪ সালে দরিরামপুর থেকে এসএসসি পাশ করেন। অতঃপর ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন এবং জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন।
নজরুল একাডেমীতে শিক্ষকতার মহান পেশায় যোগদানের মাধ্যমেই তিনি স্বীয় কর্মজীবনের সূচনা করেন। পরবর্তীতে তিনি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে ত্রিশাল ইউনিয়ন পরিষদের দুই বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন এবং এলাকার উন্নয়ন, শিক্ষা ও সামাজিক কর্মকান্ডে ব্যাপক ভূমিকা পালন ও মূল্যবান অবদান রাখেন।
তিনি নজরুল গার্লস হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী, পরে নজরুল ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা জয়েণ্ট সেক্রেটারী এবং ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
এছাড়াও তিনি ত্রিশাল জামে মসজিদের সভাপতি এবং আব্বাসিয়া আলীয়া মাদ্রাসার সেক্রেটারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ত্রিশাল উপজেলা জুট এসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ময়মনসিংহ জেলার সভাপতি ছিলেন। বিআরডিবির ময়মনসিংহ জেলার টিসিসি এর ফেডারেশন সভাপতি হিসেবে সাংগঠনিক দক্ষতা ও দৃষ্টান্তমূলক ছাপ রাখতে সক্ষম হন এবং ময়মনসিংহ জেলার শ্রেষ্ঠ সমবায়ী হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন।
তিনি ষ্টাডি ট্যুরে দক্ষিন কোরিয়া সফর করেন এবং প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় ও দর্শনীয় স্থানসমূহ পরিদর্শন করে আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও পরিমন্ডল সম্পর্কে প্রচুর বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
আব্দুর রশীদ চেয়ারম্যান সাহেব ত্রিশালের একজন ভদ্র, সাদা মনের মানুষ ছিলেন। আজীবন রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও নীতিতে অটল ছিলেন। ওনাকে কখনও কোন দোকান পাট কিংবা চার দোকানে বসতে বা আড্ডা দিতে দেখা যেত না। সিগারেট খাওয়ার চেয়ে হাতে সিগারেট রাখার স্টাইলও ছিল অসাধারণ। একজন নেতার যেসব আদর্শিক গুণ থাকার কথা তার সবটায় ছিল ওনার মাঝে।
১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত ত্রিশাল পৌরসভার নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ত্রিশাল পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং দ্বিতীয় বারও পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দ্বায়িত্বরত অবস্থায় বেশ কিছু দিন অসুস্খ থাকার পর ২৩শে আগষ্ট ২০০৭ সালে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন।
ত্যাগী সংগ্রামী এবং পরোপকারী এই নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন ত্রিশালবাসী এবং উনাকে যেন আল্লাহ তাআলা জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন।